ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ থেকে বিশ্বরোড মোড় পর্যন্ত সড়কের দৈর্ঘ্য ১২ কিলোমিটার। যেকোনো যানবাহনে এলে এ পথটি পাড়ি দিতে সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট লাগে। তবে গত কয়েকমাস ধরে সড়কটির বেহাল দশার কারণে পথটি পাড়ি দিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাগে। যানজটের কারণে ভোগান্তি চরমে।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অংশ পরিদর্শনে এসে এমন যানজটে আটকা পড়েন খোদ সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। পরে বাধ্য হয়ে তিনি মোটরসাইকেলে চড়ে আজ বুধবার (৮ অক্টোবর) দুপুর ১টার দিকে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশ্বরোড মোড়ে মহাসড়কটির বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন।
এর আগে সকালে তিনি ঢাকা থেকে মহানগর প্রভাতী এক্সপ্রেস ট্রেনে ভৈরবে পৌঁছান। পরে সেখান থেকে সড়কপথে আশুগঞ্জে আসেন। সকাল সোয়া ১০টার দিকে আশুগঞ্জের হোটেল উজান ভাটি থেকে গাড়িবহর নিয়ে বিশ্বরোডের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলে আশুগঞ্জের সোহাগপুর, সোনারামপুর ও সরাইলের বেড়তলা এলাকায় তীব্র যানজটে আটকা পড়েন তিনি। তিন ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকার পর মোটরসাইকেলে করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্বরোডে পৌঁছান উপদেষ্টা।
পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের যানজটের মূল কারণ ট্রাফিক বিভাগের গাফিলতি। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
তিনি জানান, সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলীসহ কর্মকর্তাদের ঢাকায় অফিসে না বসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশ্বরোডের অস্থায়ী কার্যালয়ে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা এ নির্দেশনা অমান্য করলে বা দায়িত্বে অবহেলা করলে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হবে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘বিশ্বরোড এলাকায় যানজট নিরসনে একটি উড়ালসেতু নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে অর্থের যোগান দেয়া হবে এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের ডিজাইন প্রণয়নসহ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সড়কপথে যানজটের কারণে রেলপথে অতিরিক্ত চাপ তৈরি হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই এ সমস্যার সমাধান করা হবে।’
এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মহাম্মদ দিদারুল আলম, পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক এবং সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে একনেক সভায় আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫১ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন পায়। ২০২০ সালে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড তিনটি প্যাকেজের কাজ শুরু করে। তবে করোনা মহামারি, বালু সংকট ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে প্রকল্পের অগ্রগতি একাধিকবার পিছিয়ে যায়।
২০২৫ সালের ৩১ জুলাই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও সম্প্রতি মেয়াদ আরও এক বছর বৃদ্ধি করা হয়েছে। একই সঙ্গে ব্যয় বেড়েছে ১৬৩ কোটি টাকা। সূত্র: সময় সংবাদ
