‘টর্চারের কথা যদি বলি, সেটা অনেক রকমের টর্চার। প্রধান চর্টার আমি বলবো মেন্টাল চর্চার। আঘাত ততটা হয়তো পাইনি। কিন্তু আমার পাশে দু’জন তুরস্কের ক্রু যারা ছিল, ওরা ইংরেজি বলে না, একজন আরেকজনের সঙ্গে ইংরেজিতে কথা বলছে। তখন মেশিনগানের ব্যারেল দিয়ে গুতা মারে। বিকট একটা আওয়াজ করে এটা করে।’ ইসরাইলি বাহিনীর হাতে আটক এবং টর্চারের পর মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরে শনিবার বিকাল ৩টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম।
ইসরাইলি বাহিনীর হাতে আটকের অভিজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা যখন জাহাজ থেকে নামি, তখন আমাদের প্রত্যেককে একেবারে উপুড় করে হাত অনেক পেছনে নিয়ে মাথা নামিয়ে নিয়ে যায়। আমাদের কারও কারও ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের জিপ ব্লকের মতোন একটা জিনিস থাকে, যেটা দিয়ে হাত বাঁধে। আমার পাশে আলী নামে একজন ভদ্রলোক ছিলেন, তিনি তিউনিসিয়ান। তার ফিলিস্তিনি শার্ট পরা ছিল। তাকে শার্ট খুলতে বলা হয়। উনি রাজি হননি। বলেন, না আমি এটা খুলবো না। তখন তার ওপর চড়াও হয়। তাকে সাহায্য করতে আদনান নামে একজন যায়, তার ওপরও চড়াও হয়।’
শহিদুল আলম বলেন, ‘আমাদের হাঁটু গেড়ে বসায়, ওটা আমার জন্য অন্তত কষ্টকর ছিল। আমার এমনিতে একটু সমস্যা হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা আমরা উপুড় হয়ে মাথা নিচু করে ওভাবে ছিলাম।’
এর আগে ইসরাইলে আটক হওয়া বাংলাদেশি আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম দেশে ফেরেন। এদিন ভোর ৪টা ৫৫ মিনিটে তাকে বহনকারী বিমানটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনে ইসরাইলের আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে গাজা অভিমুখে ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন’ নামের একটি বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্ম নৌযাত্রা শুরু করে। এতে বিভিন্ন দেশের সাংবাদিক, চিকিৎসক ও অধিকারকর্মীরা যোগ দিয়েছিলেন। ওই নৌযাত্রায় শহিদুল আলমও ছিলেন।
এরপর গত বুধবার ইসরাইলি বাহিনীর হাতে তিনিসহ অনেকে আটক হন। পরে শহিদুল আলমসহ আটক তাদেরকে ইসরাইলের কেৎজিয়েত কারাগারে নেয়া হয়।
সূত্র: মানবজমিন।
