বিদেশে চাকরির ভিসা দেওয়ার নামে ১ কোটি ২২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের হোতা আবদুল্লাহ (৪৫), পিতা—মো. জাকির হোসেন, স্থায়ী ঠিকানা—চরবাগবাড়ী, জামালপুর–কে গত ২০ নভেম্বর ২০২৫ বিকাল ৫ ঘটিকায় মোহাম্মদপুর, লালমাটিয়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি’র হিনিয়াস ক্রাইম ইউনিট। চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে কোনো অফিস, ট্রাভেল লাইসেন্স বা বৈধ অনুমোদন ছাড়া বিদেশে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভিন্ন এলাকার মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলছিলো।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, আবদুল্লাহ ও তার চক্রের সদস্যরা প্রথমে বিদেশে উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন এলাকার লোকজনকে ফাঁদে ফেলে। তারা মিথ্যা আশ্বাস দেয় যে রাশিয়ায় চাকরি, ভিসা এবং বিমানের টিকিটসহ পাঠানো হবে। এভাবে তারা একে একে ২৮ জন যাত্রীকে প্রস্তুত করে। যাত্রীরা যেন পুরো প্রক্রিয়াটি বৈধ মনে করে, সে জন্য চক্রটি পাসপোর্ট, ছবি, কাগজপত্র সংগ্রহ করে এবং “অফিসে যাচাই” এর নামে নানা রকম লোক-দেখানো অভিনয় করে। এভাবে যাত্রী প্রতি নির্ধারিত অর্থ নেওয়ার নামে তারা ধাপে ধাপে টাকা সংগ্রহ করে। গত ২ মার্চ ২০২৫ থেকে ৮ জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত প্রতারক চক্রটি মোট ২৮ জনের কাছ থেকে ব্যাংকের মাধ্যমে ১,০২,১৫,৩৮০ টাকা এবং আরও ১৬,৫০,০০০ টাকা নগদ গ্রহণ করে।
পরবর্তীতে উক্ত ২৮ জন যাত্রী বনানী থানাধীন সৈনিক ক্লাব, শিকদার প্লাজা অফিসে উপস্থিত হন। সেখানে তাদের হাতে রাশিয়ার ভিসা এবং বিমান টিকিট প্রদান করা হয়। প্রথমে ভুক্তভোগীরা ভেবেছিলেন সবকিছু ঠিকঠাক হয়েছে এবং তারা বিদেশে যাওয়ার জন্য সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত। কিন্তু দুই দিন পর অনলাইনে যাচাই করলে দেখা যায়, এই সমস্ত কাগজপত্র সম্পূর্ণ জাল। পরবর্তীতে ভুক্তভোগীরা টাকা ফেরত চাইলে আসামীরা নানা অজুহাত দিয়ে সময়ক্ষেপণ করে এবং নানা ভাবে ভয়ভিতি প্রদর্শন করে।উপায়ান্তর না পেয়ে ভুক্তভোগিদের মধ্যে একজন বনানী থানার মামলা ০৮ তাং ১০/১১/২০২৫ খ্রি. ধারা-৪০৬/৪২০/৪৬৮/৪৭১/৫০৬/৩৪ পেনাল কোড রুজু করেন। মামলাটির তদন্তভার সিআইডি গ্রহণ করার পর অভিযুক্ত আব্দুল্লাহকে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আব্দুল্লাহ তার অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করার কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে এবং জড়িত অন্যান্য অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার জন্য সিআইডির তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
