ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) এবছর ‘নগদ’ এর সহযোগিতায় ২৪টি ক্যাটাগরিতে ২৭ বিজয়ীকে বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ প্রদান করেছে। অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্তদের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও ৫০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এতে সহায়তা দিয়েছে মোবাইল আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান নগদ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের অর্থ উপদেষ্টা প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে নগদ পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান কায়সার আহমেদ চৌধুরী, গেস্ট অব অনার হিসেবে নগদ লিমিটেডের প্রশাসক মো. মোতাছিম বিল্লাহসহ নগদ পরিচালনা বোর্ডের সদস্যবৃন্দ, দেশের খ্যাতনামা সাংবাদিকবৃন্দ, নীতিনির্ধারকেরা এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুনীজনেরা উপস্থিত ছিলেন।
আজ রোববার (১৬ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের অডিটোরিয়ামে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি আয়োজিত নগদ-ডিআরইউ বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড-২০২৫ এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আগামী ৩ মাস দেশের অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন। তিনি বলেন, যদি অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব না নিত, তবে দেশের অবস্থা আরও খারাপ হতে পারত। বর্তমানে মুদ্রাস্ফীতি (ইনফ্লেশন) ১৪ শতাংশ থেকে ৮ শতাংশে নেমে এসেছে এবং এটি আরও কমবে।
দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সৃষ্ট হতাশা প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যায়নি, বরং পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আগস্ট মাসে অর্থনৈতিক অবস্থা কঠিন ছিল, কিন্তু আমরা ভেতরের অবস্থা জানি। ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভ বেড়েছে, এক্সপোর্টও বাড়ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব হলো অর্থনৈতিক কাঠামোটি সুসংহত করা, যাতে আগামী সরকার দায়িত্ব নিয়ে এটিকে আরও উন্নত করতে পারে।
তিনি বলেন, সাংবাদিকরা ‘জনগণের কণ্ঠ’। দেশের চলমান ক্রান্তিকালে সঠিক তথ্য সরবরাহ করে জনগণের পাশে থাকা সাংবাদিকদের জন্য অত্যন্ত জরুরি। যারা প্রতিবেদন দাখিল করেছেন, তাদের কাজগুলো দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও বিশ্ব প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত মূল্যবান। সাংবাদিকরা তাৎক্ষণিক সমস্যাগুলো তুলে ধরলে দ্রুত সমাধান করা সম্ভব হয়।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সাংবাদিকদের কাছে অনুরোধ, আপনারা সমালোচনার পাশাপাশি সরকারের ভালো কাজের দিকগুলোও তুলে ধরবেন এবং গঠনমূলক পরামর্শ দিয়ে সরকারকে আরও সুশৃঙ্খল ও জবাবদিহিমূলক কাজ করতে সহায়তা করবেন, যাতে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিক উভয় ক্ষেত্রেই দ্রুত এগিয়ে যায়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকন। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল। বক্তব্য রাখেন বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড জুরি বোর্ড চেয়ারম্যান ও দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ।
ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেন, ডিআরইউ বেস্ট রিপোর্টিং এ্যাওয়ার্ডে স্পন্সর করায় নগদকে ধন্যবাদ। ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে নগদ ডিআরইউর সাথে থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি বলেন, আজকে যারা ডিআরইউ বেস্ট রিপোটিং এ্যাওয়ার্ড পেয়েছে তাদেরকে অভিনন্দন আর যারা পাননি তারা ভবিষ্যতে পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল বলেন, আজকের এই অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠান ডিআরইউর বার্ষিক কর্মকাণ্ডের এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। পেশাদার সাংবাদিকতায় নিষ্ঠা, দক্ষতা ও দায়িত্ববোধকে সম্মান জানাতে ডিআরইউ প্রতি বছর বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সেরা রিপোর্টিং পুরস্কার প্রদান করে আসছে। এটি শুধু স্বীকৃতি নয়—দেশের সাংবাদিকতার গতিপথকে ইতিবাচক ও শক্তিশালী করার একটি ধারাবাহিক প্রচেষ্টা।
তিনি বলেন, সাংবাদিকতা একটি গভীর দায়িত্বের পেশা। সত্য অনুসন্ধান, জনস্বার্থ রক্ষা এবং সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা দিনরাত পরিশ্রম করেন। প্রতিকূলতার মাঝেও সহকর্মীদের এই নিবেদন—আজকের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যথাযথ স্বীকৃতি পাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে জুরি বোর্ড সদস্য মোস্তফা কামাল মজুমদার, মনোয়ার হোসেন, মাসুমুর রহমান খলিলী, মোতাহের হোসেন মাসুম, মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, জাহেদ চৌধুরী, ফখরুল আলম কাঞ্চন, ইলিয়াস খান ও ইলিয়াস হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
ডিআরইউ কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি গাযী আনোয়ার, যুগ্ম সম্পাদক নাদিয়া শারমিন, অর্থ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুমন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হাই তুহিন, দপ্তর সম্পাদক রফিক রাফি, নারী বিষয়ক সম্পাদক রোজিনা রোজী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মিজান চৌধুরী, তথ্য প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক মো. বোরহান উদ্দীন, ক্রীড়া সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান, আপ্যায়ন সম্পাদক মোহাম্মদ ছলিম উল্লাহ (মেজবাহ), কল্যাণ সম্পাদক রফিক মৃধা, কার্যনির্বাহী সদস্য মোঃ জুনায়েদ হোসাইন (জুনায়েদ শিশির), আকতারুজ্জামান, আমিনুল হক ভূঁইয়া, মো: ফারুক আলম, সুমন চৌধুরী ও মোঃ সলিম উল্ল্যা (এস. ইউ সেলিম)সহ ডিআরইউ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। আরো উপস্থিত ছিলেন ডিআরইউ’র সাবেক সভাপতি মুরসালিন নোমানী।
নগদ-ডিআরইউ বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড-২০২৫ পেয়েছেন ২৭ জন। এরমধ্যে দুটি ক্যাটাগরিতে চারজন যৌথভাবে পুরস্কার জিতেছেন।
পুরস্কার পেলেন যারা – সালাহ উদ্দিন জসিম (জাগোনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম), সাজ্জাদুর রহমান (দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড), রফিকুল ইসলাম (দ্য ডেইলি সান), এম এ নোমান (দৈনিক আমার দেশ), জিয়াদুল ইসলাম (দৈনিক আমাদের সময়), মো. শাখাওয়াত প্রিন্স (দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড), মো. শরিফুল ইসলাম (দ্য ডেইলি স্টার), দীপন নন্দী (দ্য ডেইলি স্টার), হারুন আর রশিদ (দৈনিক কালবেলা), মো. আবু সালেহ রনি (দৈনিক সমকাল), মো. রাহেনুর ইসলাম (সকালসন্ধ্যা ডটকম), মো. শওকত আলী (দৈনিক দেশ রূপান্তর), মো. জসীম উদ্দীন (ঢাকা পোস্ট ডটকম), এহসানুল হক জসীম (দ্য ডেইলি সান), মো. হেলিমুল আলম (দ্য ডেইলি স্টার), শামসুল হক মোহাম্মদ মিরাজ (দৈনিক কালেরকণ্ঠ), শাহ মো. রাশেদুর রহমান (ডিবিসি নিউজ), আবু জাহেদ মুহম্মদ সেলিম (মাছরাঙা টেলিভিশন), আলমগীর হোসেন (যমুনা টেলিভিশন), রাজিব ঘোষ (ডিবিসি নিউজ), মো. ইমদাদুল হক (চ্যানেল টোয়েন্টিফোর), মো: ইউসুফ আলী (ডিবিসি নিউজ), সুশান্ত সিনহা (একাত্তর টেলিভিশন), শাহনাজ শারমীন (একাত্তর টেলিভিশন), মেহ্দী আজাদ মাসুম (বৈশাখী টেলিভিশন), মৌসুমী ইসলাম (দ্য ডেইলি সান) এবং হাসান আরিফ (দৈনিক রূপালী বাংলাদেশ)।
